
তোমারি আলোতে আলোকিত অনিকেত
তোমার বন্ধ মনের দুয়ারে দাঁড়ায়ে আছে আজো, আশিতেও অবিরত, তোমারি অপেক্ষায়।
-রবি রায়
তুমি কি...
🖤
তুমি কি আগের মতোই আমার কথা আজো ভাব, কখনো হঠাৎ দেখা হলে আগের মতোই কি অনেক দিনের জমে থাকা তোমার আদর আবার ফিরে পাব?
তোমার মাথাভরা কুচকুচে সেই কালো চুলের ধারা আজো কি মাটি ছুঁয়ে যায়,
দেখা হলে আমি কি হারিয়ে যাব এখনো
তোমার এলোমেলো সেই সুরভিত চুলের ধারায় এক লহমায়?
তুমি কি আজো দরজা খুলে দাঁড়িয়ে থাক আমারি প্রতীক্ষায়- এমনটা ভেবে
খুঁজে খুঁজে যদি কোনোদিন গিয়েই পড়ি তোমার খোলা দরজায়, যদি সত্যিই কখনো তেমনি ঘটে যায়, তুমি কি ফিরিয়ে দেবে, প্রিয়, আমায়?
তুমি কি আজো মনে রেখেছো
নগ্নতায় মগ্ন হয়ে সেই তেরাত্রি যাপন, কেটেছিল যেন ঘোরে, কখনো হয়নি মনে ফুটবে আবার ভোরের আলো,
আঁধার যে হতে পারে এতো মনোরম আগে তো অনুভবে তা আসেনি কখনো।
খোলা অঙ্গনে ভেজা কাপড়ে শরীর লেপটে যাওয়া তোমার কতকাল আগের দেখা অপরূপ দৃশ্যশোভা যেন এই সেদিনের মনে হয়, সেই স্মৃতিভারে আজো আমার মন বিভোর হয়ে রয়,
তোমারো কি মন চায়, প্রিয়, সেদিনটা আর একবার ফিরে পাওয়ার মধুময় বাসনায় ?
তোমায় তাহলে বলি শোন মনের কথাটি আমার অতি সংগোপনে, হাঁটছি আমি এখনো, হাঁটছি তোমারি সন্ধানে, হেঁটেই চলেছি, ইচ্ছে শুধু ঘোর এ অমানিশা ভেদি পৌঁছে যেন যাই শেষ বিদায়ের ক্ষণে।
যেখানে বাতাস তোমার শরীরে দোলা দেয়, যে মাটির জল তোমার তৃষ্ণা মেটায়, তোমার শরীর অবগাহনে যেখানে আকাশ ফুঁড়ে বৃষ্টির ফোঁটা নামে, যেখানে গাছগাছালীর ছায়ায় তোমার শরীর শীতল হয়, আমি থাকতে চাই শেষ দিনগুলো সেখানেই, তোমার নরম ছোঁয়ায়।
তোমার জন্যে জেনো আজো আমি ভিজতে পারি অঝোর বৃষ্টিধারায়,
তোমার জন্যে আজো আমি ভিজতে রাজী অনন্ত জোছনায়।
আদিম আঁধার ঘনিয়ে আসে ক্রমেই মাথার পরে, বলতে পার এই আঁধারে আমি
একলা ফেলে তোমায় যাই কিকরে?
-রবি রায়
তলাস
🖤
যদি তার খোঁজ পাও কোনোদিন, বলে দিও তারে- আমি তারে ভুলিনি কখনো,
পেতে পারে ফিরে সে আমারে এখনো
তার নিজ অধিকারে,
কাঁধে মোর মাথা রেখে
এখনো সে নির্ভয়ে রাতভর
দূরপাল্লার চলতি ট্রেনে
ঘুমিয়ে নিতে পারে,
যেমনটা সে করেছিল উপভোগ
অর্ধশত বর্ষ আগে
কোনো এক নিভৃত রাতে।
আমার মনের গভীরে
গড়া আছে তিলে তিলে তারি তরে এক সুরম্য মঞ্জিল, ইচ্ছে হলেই
যেখানে তার প্রবেশের আছে
অধিকার অবাধ, এমনকি
এ মাটির মায়া কাটিয়ে
আমি যদি কালই চলে যাই
থেকে যাবে তার তরে
মোর নিজ হাতে গড়া মায়ামঞ্জিল অনন্তকাল
লোকচক্ষুর অন্তরালে মোর হৃদকাননে।
-রবি রায়
২৭/০৭/২০২৩
 |
ছবি সংগৃহীত |
বিরহী
🖤
তোমাকে চাই -
আজ আর একথা বলার স্পর্ধা
এ অধমের নাই,
তুমি তো নিজেই একদিন দিয়েছিলে মেলে
আমাকে তোমার হৃদয়, ফিরে তাকাবার সেদিন আমার হয়নিকো সময়,
একরাশ অভিমানে আহত হৃদয় বিদায় যখন নিলো, রইলো পড়ে স্মৃতি হয়ে শুধু
লাল গোলাপের পাপড়ি গুলো
বিছানায় এলোমেলো।
বেলাশেষে আজ বিদায়বেলায়
সেসব দিনের স্মৃতি
হাতড়ে বেড়াই, হন্যে হয়ে অবিরত
খুঁজেই চলি তোমায়,
ক্ষমা চেয়ে নেওয়ার অতি বিরল আশায়।
-রবি রায়
০৮/০৮/২০২৩
 |
ছবি সংগৃহীত |
আমার হৃদয় কাঁপছে
❤
তার কলমের আঁচড়ে আমার হৃদয় মাঝে আঁকা হয়ে গেছে এক পশলা অকাল বৃষ্টি,
সে এক নারী, অনিন্দ্য সুন্দরী, প্রকৃতির অকৃত্রিম সৃষ্টি।
হাতখানি তার আঁকড়ে ধরেছে আমার হাত,
লেখনীতে তার আছে যেন এক ঝর্ণাধারা, সতত ধ্বনিত হয় ভালো লাগা গান।
মনটা আমার তার প্রতি তাই ভরে গেছে ভালোবাসা আর কৃতজ্ঞতায়।
আমার হৃদয় কাঁপছে, কেন জানিনা!
ভাঙাচোরা এ হৃদয় আধারে
একটু জায়গা কি সে পেতে পারে না?
-রবি রায়
০৯/০৭/২০২৩
ওগো হারিয়ে যাওয়া প্রিয়া,
বলবে না গো আর তোমাকে
ভালোবাসি তোমায়
চিরঘুমে যাবার আগে এ অবুঝ হিয়া
একটি বারের মতো যদি
দেখা তোমার পায়।
-রবি রায়
মনে পড়ে যায়
🖤
শেষের সেদিন পড়ে মনে
আমায় দিলো বিদায়,
বলল শুধু, ফিরে এস,
থাকব প্রতীক্ষায়।
এমনি কোন পারের ঘাটে
শুভ্র বেশে এলোচুলে
বলল যেন অনেক কথা
দুটি চোখের ভাষায়।
নাউয়ে বসে মাঝ দরিয়ায়
প্রথম সেদিন আমার
মনে হলো এলাম ফেলে
নদীর পাড়ে হৃদয়,
অলক্ষ্যে পাষাণে বুঝি
ফুটল সেদিন ফুল।
-রবি রায়
 |
ছবি সংগৃহীত |
মর্মবেদনা
🖤
কেমন যেন কষ্টে ভুগি এখন,
মনের আয়নায়
বারে বারে দেখা দিয়ে যায় সেই মুখ
যে আমায় পারের খেয়ায়
হাত ধরে দিয়েছিল তুলে
তার ভরা যৌবনবেলায়
দিন বদলের দিয়ে দায়।
তারপর কেটে গেল কতকাল, আজ
হয়তোবা সে কিছু জানতে চায়,
পরাজয়ের গ্লানিতে দগ্ধ হৃদয়,
শয্যাশায়ী আমি চোখ বুজে ভেবে মরি-
জবাবদিহির কিবা উপায়!
-রবি রায়
বেশরম ইচ্ছে
রবি রায়
মাঝে মাঝে বেশরম ইচ্ছে জাগে মনে
কেউ আমার সকালের ঘুম ভাঙ্গাক এই বলে-
হ্যাঁগো, চা খাবে না,
অনেক যে বেলা হয়ে গেছে।
আমি ঘুম চোখে বলি-
আর একটু ঘুমিয়ে নি, চোখ খুলতে পারছিনা।
তারপর ধড়ফড় করে উঠেই পড়ি-
সকাল সাড়ে সাতটার ট্রেনটা ধরতে না পারলে
অপিসের হাজিরাখাতায় লেট সাইন পড়বে,
তিনটে লাল টিক মার্ক মানে মাস ফুরালে একদিনের বেতন কাটা যাবে,
বাজারের থলিতে টান পড়বে।
এখন অবশ্য আর কোন ভুবনের ভার নেই, দায় নেই দায়িত্ব নেই,
সপ্তাহ শেষে বাজার যাওয়া বা রাতে ফেরার পথে বাজার করা নেই,
বাজারের কোন খবরও রাখিনা,
জানিনা কোন ট্রেন কখন এল কখন গেল,
তবুও ভোরের আলো ফুটলেই ঘুম ঘাঙে, কাউকে ডাকতে হয়না,
শীতকালেও ঠাণ্ডা জলে চোখমুখ ধুই,
আগের মত আর বাটিভরা ঈষৎউষ্ণ জল রাখা থাকেনা,
নিজের চা নিজেই বানিয়ে খাই।
তবে আজও যেন অন্য এক ট্রেন ধরার আতঙ্ক তাড়া দেয়,
তাই ভোরে উঠেই বসে যাই ফেলে আসা দিনগুলোর স্মৃতিচারণায়!
শুধু মাঝে মাঝে ভুল করে বেশরম ইচ্ছে জাগে-
সকালের চায়ের কাপ হাতে নিয়ে কেউ যদি ভুল করেও ঘুম ভাঙাতে আসত আমায়!
No comments:
Post a Comment